ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ , ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বলেশ্বর চরে তরমুজের বাম্পার ফলন

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১১-০৪-২০২৫ ০৩:৫১:৩২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১১-০৪-২০২৫ ০৪:০৪:২১ অপরাহ্ন
বলেশ্বর চরে তরমুজের বাম্পার ফলন সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ বলেশ্বর চর এলাকা জুড়ে তরমুজ ক্ষেতের সবুজের সমারোহ। মঘিয়া এলাকার বিশাল বলেশ্বর নদীর চর ,আন্ধারমানিক, চরসোনাকুর এলাকায় কৃষকের বপনকৃত  ক্ষেতে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চারিদিকে এখন বড় বড় আকারের তরমুজের বাম্পার ফলনে সেখানকার কৃষক কৃষানির মুখে হাসির ঝিলিক।

প্রতিদিন এলাকার মানুষ ছুটে আসেন এই তরমুজের ক্ষেত দর্শনে। তাদের তরমুজ দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়। সেখানে এখন প্রতিদিন বিকেলে দর্শনার্থীদের আগমনে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ। কচুয়া উপজেলার ৮০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। গতবছর ১’শ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হলেও অতি বৃষ্টির কারণে চাষিরা আশানুরূপ সাফল্য পাননি।গত মৌসুমে ১’শ হেক্টর জমির তরমুজ বিক্রি হয়েছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আর তার তুলনায় বর্তমান মৌসুমে ৮০ হেক্টর জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় তরমুজের যে ফলন ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে দু'কোটি টাকা আরও সাড়ে ৪ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হবে বলে লাভের আশা দেখছেন সেখানকার চাষিরা।

কৃষি অফিসে থেকে, কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ, সার,বালাই নাশক ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।তরমুজ চাষের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কৃষি কর্মকর্তা তাদের পাশে থেকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অধিকাংশ কৃষক শ্যালো ইঞ্জিন এবং পা দিয়ে ঢেঁকি কলের মাধ্যমে নিয়মিত পানি ক্ষেতে সরবরাহ করেন। তা ছাড়া বলেশ্বর নদীর পানি  মিষ্টি হওয়ায় যতটা সম্ভব তাও ব্যবহার করা হয়।ছোট আন্ধামানিক গ্রামের কৃষক দেবদাস মজুমদার (৩৫) তিনি ৩ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন, বিঘা প্রতি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় করেন, চরসোনাকুর গ্রামের কৃষক সুদেব মিস্ত্রি (৪৫) তিনি ৩ বিঘা জমির  তরমুজ বিক্রি করেছেন ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আন্ধার মানিক বলেশ্বর চর এলাকার কৃষক কালিপদ মিস্ত্রি (৪০) তিনি ২ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেন এবং আশাবাদী যে ৫ লাখ টাকা তার আয় হবে।

কৃষি উপসহকারী সঞ্জিব মল্লিক জানান, এবছর আমাদের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১১০ হেক্টর, কিন্তু আবাদ হয়েছে ৮০ হেক্টরে। এবছর প্রতিটি তরমুজের ওজন ৮থেকে ১২কেজির  মত হয়েছে।এক বিঘা জমিতে তরমুজ হয় ১২’শ পিস।গত বছরের তুলনায়  এবছর বিঘা প্রতি ৬০-৭০ হাজার টাকা দাম বেশি পাচ্ছেন কৃষক। তাই আগামী বছর চাষের পরিমান বাড়বে প্রায় ৫০ হেক্টর।  ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে আমন ধান কাটার পরে তরমুজের  বীজ বপন করে থাকে স্থানীয় চাষিরা তবে এবার আগাম তরমুজের ফলন ভালো  হলে রোজায় খুব ভালো দামে বিক্রি করেছেন।কচুয়ার তরমুজ ঢাকা থেকে পাইকার এসে ক্ষেত দেখে দর দাম করে আগাম টাকা দিয়ে ক্ষেত কিনে নিয়ে ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যান রাজধানী ঢাকাতে।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী কে জানান,৬৮ শতকের  এক বিঘায় চাষ করতে কৃষকের  খরচ হয় ৫০থেকে ৬০ হাজার টাকা। বিক্রি করেন ১লাখ ৮০ হাজার থেকে ২লাখ টাকা। দিনে দিনে তরমুজ চাষে ঝুঁকে পড়ছেন আশপাশের কৃষক। কৃষি কর্মকর্তা আশাবাদী যে আগামীতে ঝড়- ঝঞ্ঝা না হলে এবং যথারীতি রোগ বালাই দমনে সার্বক্ষণিক নজরদারি করতে পারলেই তরমুজ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা ও অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যে এখানকার কৃষি নির্ভর মানুষগুলো আরও বেশি স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ